সরকারি সূত্রের মতে, ব্রাজিলে রাষ্ট্রপতি লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা একটি সাধারণ ব্রিকস মুদ্রার ধারণা ত্যাগ করার কথা বিবেচনা করছেন, এমনকি ব্রাজিল ২০২৫ সালের জুলাই মাসে গ্রুপের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই সম্ভাব্য মুখোশ ডলারমুক্তকরণের ভবিষ্যত এবং ব্রিকস ব্লকের সংহতি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে। এই প্রবন্ধে ব্রাজিলের এই দ্বিধা, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা এবং মার্কিন ডলারের আধিপত্যের প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ব্রাজিল: নতুন মুদ্রার উপর নয়, ডলারের উপর নির্ভরতা শেষ করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত
যদিও ব্রিকস মুদ্রা তৈরিকে মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরতা কমানোর একটি উপায় হিসেবে দেখা হয়েছিল, ব্রাজিল এখন অন্যান্য পদ্ধতির পক্ষে বলে মনে হচ্ছে। রয়টার্স সূত্রের মতে, ব্রাজিল ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য বিকল্প সমাধান প্রস্তাব করতে চায়, যা নতুন মুদ্রা তৈরি না করেই ডলারকে এড়িয়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে। এই পদ্ধতির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে স্থানীয় মুদ্রার ব্যবহার বৃদ্ধি করা, অথবা বিকল্প অর্থপ্রদান ব্যবস্থার উন্নয়ন অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
এই কৌশলটি আংশিকভাবে ব্রিকসের মতো বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি গোষ্ঠীর জন্য একটি সাধারণ মুদ্রা তৈরির জটিলতা এবং চ্যালেঞ্জগুলির দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। সদস্য দেশগুলির অর্থনীতির উন্নয়ন এবং স্বার্থের স্তর ভিন্ন, যার ফলে মুদ্রানীতির সমন্বয় সাধন এবং একটি সাধারণ আর্থিক অবকাঠামো প্রতিষ্ঠা করা কঠিন হয়ে পড়ে। ব্রাজিল, তার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আগ্রহী, ডলারের উপর নির্ভরতা কমাতে আরও বাস্তবসম্মত এবং ধীরে ধীরে পদ্ধতি পছন্দ করতে পারে।
ট্রাম্প এবং ব্রিকস: শুল্ক হুমকি এবং জোটের ভঙ্গুরতা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের ডলার বিমুদ্রীকরণের বিরোধিতাও ব্রাজিলের সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখতে পারে। রয়টার্সের মতে, ব্রিকস ট্রাম্পের চাপের মুখে রয়েছে, যিনি সদস্য দেশগুলি মার্কিন ডলার ত্যাগ করলে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। এই হুমকি, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়নি, তা বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থায় ডলারের প্রভাবশালী অবস্থান রক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দৃঢ় সংকল্পকে প্রতিফলিত করে। রাশিয়া এবং ইরান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলছে, যা তাদের সাহায্য করতে পারে।
সাধারণ মুদ্রা নিয়ে ব্রিকসের মধ্যেও বিভক্তি স্পষ্ট। উদাহরণস্বরূপ, ভারতও আন্তঃসীমান্ত লেনদেনের জন্য মার্কিন ডলার ব্যবহারের প্রতি আপত্তি প্রকাশ করেছে এবং সমর্থন জানিয়েছে। শুধুমাত্র রাশিয়া, চীন এবং ইরানই ব্রিকস মুদ্রা তৈরিতে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করে বলে মনে হচ্ছে, মূলত তাদের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে অথবা বিশ্বব্যাপী অর্থায়নে আধিপত্য বিস্তারের উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে। এই ভিন্নতাগুলি জোটের ভঙ্গুরতা তুলে ধরে এবং সাধারণ মুদ্রা প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত করে তোলে।